স্বদেশ ডেস্ক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে অর্ধেক অস্ত্রোপচার করে ফেলে চলে গেছেন এক চিকিৎসক। গতকাল বুধবার দুপুরে পৌর এলাকার জেল রোডে আল খলিল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যার দিকে ওই প্রসূতিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঢাকায় পাঠানো হয়। অন্তঃসত্ত্বা রিক্তা আক্তার জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শাকিল মিয়ার স্ত্রী।
স্বজনরা অভিযোগ করেন, রিক্তাকে গতকাল বুধবার অস্ত্রোপচারের জন্য জেলা শহরের জেল রোডের আল খলিল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়। এসময় গাইনী চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমা অন্তঃসত্ত্বা রিক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিতে বলেন। পরে তাকে দুপুরে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসক। এসময় চিকিৎসক দেখেন আল্ট্রাসনোগ্রাফির সঙ্গে রোগীর গর্ভের অবস্থার কোনো মিল নেই। তাই রোগীকে অর্ধেক অপারেশন করে থিয়েটারে ফেলে চিকিৎসক চলে যান।
অর্ধেক অস্ত্রোপচার করার কারণে রক্তক্ষরণের ফলে রিক্তার অবস্থা অবনতির দিকে যায়। এই অবস্থায় তার স্বজনরা জানতে পেরে হাসপাতালে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে চলে হুলুস্থুল।
এরইমধ্যে ঘটনাটি জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে সদর মডেল থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অর্ধেক অপারেশন করা প্রসূতিকে ব্যান্ডেজ করে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকায় পাঠানো হয়।
অভিযুক্ত হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খলিল বশির মানিক বলেন, ‘রিক্তাকে সকালে শহরের অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করলে রিপোর্ট ভালো আসে এবং সেই রিপোর্ট নিয়ে আল খলিল হাসপাতালে চলে আসে অস্ত্রোপচারের জন্য। কিন্তু যখন চিকিৎসক সায়মা রাহমান ইমা অস্ত্রোপচার করা শুরু করেন তখন দেখেন যে রিপোর্টের সঙ্গে বাচ্চার অবস্থান ঠিক নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোগীর পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা হাসপাতালে ঝামেলা করে। পরে আমরা নিজ দায়িত্বে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাই।’ এ প্রসঙ্গে জানতে চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে গর্ভবতী নারীকে ঢাকায় অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানো হয়। তবে ভুল চিকিৎসার বিষয়ে কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’